কীর্তনখোলা ও নলছিটি নদীরই একটি বর্ধিত শাখা। আড়িয়াল খাঁ নদীটি বরিশাল সদর উপজেলার ভাসানী চরে এসে ভাসানীচর নদী নাম ধারণ করে। বরিশাল শহরের ৫ কিমি উত্তরে এই নদীর নাম হয় কীর্তনখোলা, নলছিটি উপজেলায় (ঝালকাঠি জেলা) নলছিটি এবং ঝালকাঠি সদর উপজেলায় প্রবেশ করে হয় সুগন্ধা। এই সুগন্ধাই ঝালকাঠি শহরের কাছে এসে বিষখালী নাম ধারণ করে। ঝালকাঠি শহরের কাছে নদীটি এক বাঁকের সৃষ্টি করে সোজা দক্ষিণে সাগর অভিমুখে প্রবাহিত হয়েছে। বিষখালী এই বাঁকের কাছে কাউখালী এবং গাবখান খালের মাধ্যমে মধুমতি এবং কচা নদীর প্রবাহ পেয়ে থাকে। বামনা উপজেলার ভাটিতে বাকদুঘ, আয়লা প্রভৃতি নদীর মাধ্যমে বুড়িশ্বর নদী প্রণালীর সঙ্গে বিষখালীর সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। নদীটি পাথরঘাটার ১৩ কিমি ভাটিতে বলেশ্বর-হরিণঘাটা মোহনার মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।
বিষখালী নদীটি সম্পূর্ণভাবে জোয়ার-ভাটা দ্বারা প্রভাবিত। বেতনা, বামনা, বরগুনা এবং পাথরঘাটায় পানি সংগ্রহ করে লবণাক্ততা বিশ্লেষণ করা হয়। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য ৯৬ কিমি। উৎপত্তি স্থল থেকে ৩০ কিমি পর্যন্ত এর গড় বিস্তার ১ কিমি এবং পরবর্তী অংশের গড় বিস্তার ২ কিমি; গড় গভীরতা প্রায় ১৬ মিটার।
বিষখালী ভাঙন প্রবণ এবং এর ভাঙনের ফলে বেতাগী, আনুয়া, বামনা প্রভৃতি শহর ও নদীবন্দর আশঙ্কাজনকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বন্যা ও লবণাক্ততা রোধের জন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ভেড়ীবাঁধ দেওয়া হয়েছে। তবে নদীর প্রবল ভাঙনে কোন কোন স্থানে এই বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নদীটির বিভিন্ন অংশে দ্বীপ/চর গঠন প্রক্রিয়া সক্রিয়। কিছু কিছু চরে জনবসতি রয়েছে এবং ফসলের আবাদ হয়। বিষখালীর শাখা নদী, যেমন বদনখালীকোন ও খাকদোন পানি প্রবাহের স্বল্পতার কারণে আস্তে আস্তে শুকিয়ে যাচ্ছে এবং নদীর বুকে চর জেগে উঠছে। নদীটির উত্তর তীরে ঝালকাঠি, বেতাগী, কাঠালিয়া, বামনা, বরগুনা, পাথরঘাটা, ফুলঝুড়ি প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য স্থান।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS